কয়েক মাস আগে, ‘অবশেষে ব্যাটেলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া (BGMI) স্বমহিমায় ভারতে ফিরে আসছে’ এমন খবর প্রচারিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ডেভলপার সংস্থা ‘ক্রাফটন’ (Krafton) খুব শীঘ্রই তাদের এই জনপ্রিয় ব্যাটেল রয়্যাল স্টাইল গেমের জন্য নয়া আপডেট রিলিজ করার কথা নিশ্চিত করে। এমনকি নয়া আপডেটের অধীনে কি কি পরিবর্তন নিয়ে আসা হবে সেই তথ্যও জানানো হয়। ফলে এদেশের গেমাররা একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন যে, স্বল্প সময়ের মধ্যেই পুনরায় তারা নিজেদের BGMI অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস ফিরে পাবে।
কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার কারণে মনে হচ্ছে এই সার্ভাইভাল শুটার গেমটি আবারো ভারতে নিষিদ্ধ হতে চলেছে! হালফিলে সীমা হায়দার নামের এক পাকিস্তানের নাগরিক ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। এদেশে আসার কারণ হিসাবে তিনি জানান যে, BGMI গেমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তার সাথে শচীন মীনা নামের এক ব্যক্তির সাথে পরিচয় ও পরবর্তীতে প্রনয় ঘটে।
এই ঘটনা সামনে আসতেই ভারত সরকার ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ বিষয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে সুরক্ষা বিভাগের প্রধান বিষয় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রক কমিশনার জে.এন.সিংহা জানান, গত কয়েকদিন থেকে গেম এপ্লিকেশন সম্পর্কে সরকারের কাছে বিশেষ ধারণা জাগিত হচ্ছে।
BGMI এর প্রস্তাবিত সম্পর্কে সরকারি আধিকারিকরা মন্তব্য করেছেন যে, এই গেমে সংগৃহীত ডেটা যেসব তথ্যের মধ্যে লোকেশন ও অডিও সহ অন্যান্য তথ্য রয়েছে, সেগুলি সম্ভবত চীনের সাথে যুক্ত সার্ভারে পাঠানো হচ্ছে। এটি যে সম্ভাব্য নাগরিক নিয়ের উপর নজরদারি বা সাইবার আক্রমণের জন্য অপব্যবহার করা হতে পারে তা উল্লেখযোগ্য। এ সঙ্গে, যেসব কারণে PUBG Mobile বন্ধ করা হয়েছিল, সেসব অভিযোগ এবার BGMI-তে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
সীমা হায়দারের এই ঘটনা দেখে কেন্দ্রীয় সরকারের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, যিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে সমন্বয়ের দায়িত্বে অংশগ্রহণ করেন, অ্যাপটির ব্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা এই ধরনের গেমিং প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার করা থেকে মন্তব্য করেন যে, এটি বিশেষভাবে সতর্কতা ও সাবধানতা নেওয়া প্রয়োজন।
BGMI বা Battlegrounds Mobile India নামে পুনঃবার রিলিজ হওয়ার পরে সরকারি আধিকারিকরা বিশেষ গমন দিচ্ছেন এই এপটির ব্যবহারে, যাতে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিজেদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সংরক্ষণ করা হতে পারে।
সাধারণত, বিজি এম জি আই (BGMI) নামে পরিচিত এই গেমের সার্ভারগুলি মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। তবে, ভারতীয় সরকার এখন দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় ডেটা সংরক্ষণের জন্য মান নিশ্চিত করতে চান যে, তা যে অন্যত্র সংগৃহীত হয়েছে, অর্থাৎ বাহিরের দেশের বা চীনের সার্ভারে। এটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ক্রাফটনের অনুসারে এই বিষয়ে তদন্ত করা হবে এবং বাহ্যিকভাবে তথ্য প্রদান করা হবে। সরকারী কর্তৃপক্ষ এখন তথ্যের জন্য অপেক্ষায় আছে এবং সপ্তাহের মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হবে, যার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশেষভাবে, এই বৈঠকে গেমের ডেভেলপারদের মধ্যে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে এবং কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থাগুলি প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত নিতে অংশগ্রহণ করবেন। এ বিষয়ে সরকার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়, এর ফলে সার্ভার স্থানান্তরের মৌলিক সত্তা নিশ্চিত করা হবে বা বিভিন্ন বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। এই বিষয়ে বৈঠকগুলির মাধ্যমে নেতৃত্ব প্রদান করা হবে এবং বাস্তবায়নের সম্ভাবনাগুলি বিতরণ করা হবে।
বিজিএমআই ২০২২ সালে কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল?
২০২২ সালের ২৮শে জুলাই, পাবজি মোবাইল ইন্ডিয়া (BGMI) গেমটি অবাক করা মতো গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর থেকে সরানো হয়েছিল। অপসারণের প্রারম্ভে গেমটির নিষিদ্ধের কারণ অজানা ছিল, তবে পরবর্তীতে অনুমান করা হয়েছিল যে চীন সংযোগ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে এটি নিষিদ্ধ হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল হামিদের উক্ত সিদ্ধান্তের সাথে সম্পর্কে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল।
চীন সংযোগের অভিযোগ থেকে উদ্ভাবিত সন্দেহের কারণে, ভারতীয় ব্যবহারকারীদের ডেটা প্রাইভেসি ও সিকিউরিটির সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যা পতনের হীন হানির উল্লেখ করে। এই অভিযোগের ফলে গেমটির অবশ্যই বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এ অভিযোগের সাথে সম্পর্কে, বিভিন্ন বিভাগের নানা মতামত ও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছিল, এর মধ্যে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেইটি এর অভিযোগের বিচারের জন্য সারিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
একই ধরনের অভিযোগের কারণে, বাংলাদেশে প্রায়ই বিভিন্ন পপুলার গেম বন্ধ করা হয়ে থাকে, যা নিরাপত্তা সম্পর্কিত সন্দেহজনক মুদ্রা বা অনুমান থেকে উদ্ভূত হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য, প্রযুক্তিগত সুরক্ষা বাড়ানো ও সাংবিধানিক কাঠামো গড়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করা উচিত।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য
[sp_easyaccordion id=”4516″]