বাজারে অস্বচ্ছ মুল্য! অনলাইনে ৪৯ টাকায় ৪৮টি ডিম কিনতে গিয়ে মহিলা ভুলে গেলেন এবং ৪৮০০০ টাকা খরচ করলেন।

অনলাইনে ডিম কিনে পেট, পকেট দুইই বাঁচাতে চেয়েছিলেন এক মহিলা, কিন্তু সস্তা অফারের লোভই শেষমেশ কাল হয়ে দাঁড়াল! এই ধরনের দুঃসংকেতের মধ্যে অনলাইন বাজারের প্রবেশ ও বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের প্রতারণার কারণে পরিণত হচ্ছে। এখন বাংলাদেশের মতো বাঙালিও এখন অনলাইনে কেনাকাটার অভ্যেসে ডুবে গেছেন। ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে খাবার-মুদিখানার জিনিস, বিউটি প্রোডাক্ট, পোশাক সহ প্রয়োজনের যে কোন জিনিসের কেনাকাটা এখন হাতের মুঠোয়।

অনলাইনে শপিংর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ে কোনোভাবেই যে ধরনের অফার চাই, সে নিয়ে যত্ন নেওয়া জরুরি। অনলাইন এবং অফলাইন বিশেষজ্ঞদের অনুসরণ করে এবং রিভিউ পড়ে প্রোডাক্ট নিয়ে নির্ধারণ নেওয়ার অভ্যাস অনিবার্য। আবার সঠিক ও বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট বেছে নিতেও গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইন শপিংর সঙ্গে যুক্ত অফার এবং ছাড়গুলির পেছনে সতর্ক থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই সময়ে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের বৃদ্ধির সাথে সাথে অনলাইন স্ক্যামের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের নিশ্চিততা ছাড়াও কেনাকাটা করার সময়ে অধিক সতর্কতা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। বাড়িতে বসে অনলাইন কেনাকাটা করার আদালত তথা উপায় অনেক, কিন্তু যদিও নিজের সুরক্ষা সিদ্ধান্ত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

অনলাইনে ডিমের সহজ অফার! বেঙ্গালুরুর মহিলা আবেগে পরিপূর্ণ হয়ে উঠছেন।

রিপোর্ট অনুযায়ী, হালফিলে বেঙ্গালুরুর বসন্ত নগরের এক মহিলা অনলাইনে দারুণ সস্তা অফার দেখে ডিম কেনার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেই চক্করে তিনি খুইয়ে ফেলেন হাজার হাজার টাকা। গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি ওই মহিলা অনলাইনে বিভিন্ন জিনিসের দাম-অফার ঘেঁটে দেখেছিলেন। ওই সময় ডিমের ওপর একটি লোভনীয় অফারের বিজ্ঞাপন তাঁর নজর আসে। তিনি দেখেন যে পুরো ৪৮টি অর্থাৎ চার ডজন ডিম মাত্র ৪৯ টাকায় কেনার সুযোগ মিলছে। যেহেতু বাজারে বর্তমানে ডিমের দাম অনেকটাই বেশি – গড়ে প্রায় ৭ টাকা, তাই হিসেব অনুযায়ী ৪৮টি ডিমের দাম ৩০০ টাকারও বেশি হয়। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই লোভ সামলাতে না পেরে টাকা বাঁচিয়ে পেটপুজো সারার উদ্দেশ্যে, বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন বেঙ্গালুরুবাসিনী।

পুলিশের কাছে ওই মহিলা জানিয়েছেন যে, তিনি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতেই একটি ওয়েব পেজ খোলে যেখানে মুরগি প্রতিপালন, ডিম সংগ্রহ ইত্যাদি বিষয়ে অনেক তথ্য ছিল। আর পেজের নিচে ছিল ৪৯ টাকায় ৪৮টি ডিম কেনার অফার। সেই অফারে আবার ক্লিক করতেই আরও একটি নতুন পেজ খোলে, সেখানে ডিম সংক্রান্ত কিছু তথ্যের পাশাপাশি পেমেন্টের অপশন দেখা যায়। ওই অপশন অনুযায়ী, মহিলাটি টাকা মেটানোর জন্য নিজের ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দেন এবং অর্ডার প্লেস করার চেষ্টা করেন।

তাঁর থেকে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, CVV নম্বর ইত্যাদি চাওয়া হয়। সেইসব তথ্য দিয়ে টাকার পরিমাণ লিখে ক্লিক করতেই ফোনে একটি ওটিপি (OTP) মেসেজ আসে।

অনলাইনে ডিমের অফার দেখে লোভে পরে বেঙ্গালুরুর এক মহিলা। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, ওটিপি এন্টার করার আগেই তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৮,১৯৯ টাকা এক লহমায় গায়েব হয়ে যায়। এর পরিবর্তে তাঁর কাছে ব্যাঙ্ক থেকে একটি ফোন আসে এবং এই ট্রানজাকশন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। একই সময়ে মহিলা অবাক হয়ে গিয়ে ব্যাঙ্কে গোটা ঘটনাটি জানান, ব্যাঙ্ক তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাকাউন্টটি ব্লকও করে দেয়। তবে দেরি হওয়ায় ঘটনা হতে যায়, উপায় না পেয়ে মহিলাটি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে।

সব শেষে বলা হচ্ছে, অনলাইনে কোনো জিনিস কিনতে আগ্রহী হলে চোখ-কান খোলা রেখে ক্রয় করা উচিত। স্ক্যামারদের প্রতিদিন নতুন নতুন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে আসা দেখা যায়, এই কারণে অত্যন্ত সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অনলাইনে লোভান্বিত হওয়া এখন কোনো বিশেষ ঘটনা নয়, এটি সাধারণ ঘটনা হিসেবে গন্য হতে শুরু করেছে। এই ধারণায় থাকা একটি ভালো প্রেমিক, যে দিন ও রাত সতর্কতা অবলম্বন করে।

সচরাচর জিজ্ঞাস্য

[sp_easyaccordion id=”4238″]

উপসংহার

মহিলার অনলাইন শপিং অভিজ্ঞতা একটি শিক্ষামূলক ঘটনা হিসেবে মনে হবে। তার প্রতিক্রিয়া নির্ভরশীলতা এবং সতর্কতা অভিজ্ঞতার গভীরতা নির্ধারণ করে। আমাদের সমাজে অনলাইন দেখা দেয় দামের সততা নিরীক্ষণের প্রয়োজনীয়তা। সাথে সাথে, মানুষের সচেতনতা বাড়ানো উচিত যে অনলাইনে অফার এবং দামের বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।

আমরা সকলের একটি প্রকার উদাহরণ পেলাম যে অনলাইনে সস্তা পন্যের লোভনীয় অফার সত্যিকারে বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং এর পেছনে অনেক সমস্যা গুলো লুকিয়ে আছে। এই ঘটনা আমাদেরকে ওজন ধরে দেওয়া উচিত যে, অনলাইন শপিংয়ের মধ্যে নিজের সতর্কতা এবং স্বাধীনতা রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment